গুণীজন সম্ভার খ্যাত রাউজান উপজেলার- রাউজান সাংবাদিক পরিষদ চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
গতকাল বুধবার ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় নগরীর কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ বর্নাট্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অভিষেক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাউজানে বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, আজ দিনটি আমার জন্য বিশেষ একটি দিন। সকল সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজন ও সচেতন নাগরিকরা আজ এখানে উপস্থিত। রাউজান সাংবাদিক পরিষদ চট্টগ্রাম এ উদ্যোগ অত্যন্ত ভালো। এই পরিষদ যেন দীর্ঘস্থায়ী হয় সে পরিকল্পনা করতে হবে। যাতে দেশের, মানুষের ও সাংবাদিকদের নিজেদের উপকার হয়।রাউজান ও চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে সবার কিছু দায়িত্ব আছে
তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইদের কাছে অনুরোধ, দেশটা আগে। ভেদাভেদ থাকবে। আসুন একযোগে দেশ গড়ার কাজ করি। সাংবাদিকদরা পজেটিভ উদ্যোগ নেন। আপনাদের একটা ঠিকানা থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। সবাই মিলে ভূমিকা রাখব।
তিনি বলেন, রাউজান একসময় সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল, পূর্বে মন্ত্রী এমপি ছিল এখন শান্তিপ্রিয় জায়গা, রাউজান সারা বাংলাশের উন্নয়নে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে। রাউজানে আয়তন ২৪৩ বর্গ কি.মি,জনসংখ্যা৬,৫০,০০০হাজার,
শিক্ষার হার ৬৮.১৪%,এতিমখানা ২১টি, মসজিদ৫১২টি মন্দির ৩১৪টি,বৌদ্ধ বিহার ১৩৭টি,বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ৩টি,বৃদ্ধাশ্রম ২টি,বিশ্ববিদ্যালয় একটি,আয়ুর্বেদিক কলেজ সহ কলেজ ১৩টি,প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২টি,মাদ্রাসা সংখ্যা ২২টি, মোট খাদ্য উৎপাদন ৫৬৫৪৬ মে.টন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বৃদ্ধা নিবাস ও সায়মা ওয়াজেদ অটিজম ইনস্টিটিউট এন্ড হোম, ৫ লক্ষ বৃক্ষরোপণ যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা যা আমরা রোপণ করেছি। যাতে আমাদের দেখাদেখি অন্যদেরও আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আমি কাতারে চারশ প্রবাসি বসবাসকারী পাড়ায় তাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করার জন্য একটি স্কুলে অনুদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছি।
ফজলে করিম চৌধুরী আরও বলেন সাংবাদিক ভাইরা কিছু বিষয় তুলে ধরলে মানুষের চোখে পড়ে। আমার কিছু ভুল থাকলেও বলুন। আমি ইতিবাচক মানুষ। বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতা করুন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক শুরুতেই বলেন, ফেনী, মিরেরশরাই হয়ে চট্টগ্রামে একটি রেলের যোগাযোগ ব্যবস্থা হলে অন্তত ৩০ % লোক তাদের কর্মস্থলে দৈনিক আসা যাওয়া করতে পারবে, এটি বাস্তবায়নে অনুরোধ করেন রেলওয়ে সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য এবিএম ফজল করিম চৌধুরীর কাছে।
তিনি আরও বলেন, রাউজান এক সমৃদ্ধ জনপদ। ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্যসহ সকল ক্ষেত্রে এক অগ্রসর জনপদ রাউজান। অনেক ইতিহাসের সূতিকাগার রাউজান। মাস্টারদা সূর্য সেন ও কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী, কবি নবীন সেনসহ অনেক গুণীজন এই রাউজানের সন্তান। দৈনিক আজাদী ও দৈনিক পূর্বকোণ দুটি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতাও রাউজানের।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা চট্টগ্রামের মানুষের জন্য কাগজ করেছিলেন। অনেকে বলে ঢাকা থেকে কাগজ করেন না কেন-! সেটা আমার জীবদ্দশায় কখনো হবে না। চট্টগ্রামের মানুষের সুখ দুঃখর প্রকাশ করার জন্যই আজাদী সৃষ্টি।
বিশেষ অতিথি ডা. ম রমিজউদ্দিন চৌধুরী বলেন,রাউজানের এমপি আমার শৈশবের বন্ধু। উনি অত্যন্ত ডেডিকেটেড। রাউজানের অভূতপূর্ব উন্নতি করেছেন। রাউজানের এমপির চোখে পড়লেই তিনি কাজ করবেন। সাংবাদিকদের জনসাধারণের কথা বলতে হবে।সাংবাদিকদের কাজ হচ্ছে জনপদের চাহিদা তুলে ধরা। এবিএম ফজল করিম চৌধুরী নিজের কাজের প্রতি অত্যন্ত নিবেদিত। আমি ফজল করিম চৌধুরীর সাফল্য কামনা করছি।
অতিথি বক্তব্যে,রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছনুল হায়দার চৌধুরী এসময় , সাংবাদিকদের পক্ষে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে রাউজান সাংবাদিক পরিষদের অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী খান। তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আমরা রাউজানের উন্নয়নসহ সব বিষয় তুলে ধরতে চাই। বৃহত্তম আয়োজনে এবিএম ফজল করিম চৌধুরী উৎসাহ ও সহযোগিতা এবং অভিষেক ও সংবর্ধনা ২০২৩ উদযাপন পরিষদ আহবায় মোহাম্মদ আলী , যুগ্ন আহ্বায়ক ডেইজি মদুদ, মোহাম্মদ জহিরসহ আয়োজনে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম। এতে অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল,কনফিডেন্স সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া, সিআইপি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি ইয়াছিন চৌধুরী,রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান,সাবেক সিভিল সার্জন সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এসময় সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সাংবাদিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি শামসুল, প্রবীন ও সিনিয়র সাংবাদিক সূর্যোদয় ও ঢাকা প্রতিদিনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জুবায়ের সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম মহানগরী যুবলীগের অন্যতম নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর সাবেক প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো চৌধুরী ফরিদ,সাংবাদিক ইউনিয়নে সহ-সভাপতি রুবেল খান, প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মানিত সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আলী ও সদস্য সচিব সৈয়দ আলমগীর সবুজ।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি চার সাংবাদিককে সম্মাননা ক্রেজ প্রদান করেন এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি মেজবান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।






