চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকায় এটিএম কার্ড প্রতারক চক্রের এক হোতাকে টাকাসহ আটক করেছে ইপিজেড থান পুলিশ

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকায়  গার্মেন্টস শ্রমিকদের এটিএম কার্ড হতে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা উত্তোলনকারী ঘটনায় জড়িত এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে ইপিজেড থানা পুলিশ।

গত ১৪ ই এপ্রিল চৌধুরী মার্কেট এটিএম বুথের পাশে ঘুরাঘুরি করার সময় সন্দেহভাজন কথাবার্তা বললে  ইপিজেট থানা পুলিশ রেশমি বেগম প্রকাশ তুফান নামে এ মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর টহল পুলিশকে মৌখিক অভিযোগ করী বাদিনি বিলকিস বেগমকে থানায় খবর দিলে আটক কৃত ঐ মহিলাকে সনাক্ত করে বলে এই মেয়েটিই আমার এটিএম কার্ড নিয়েছিল তাৎক্ষণিকভাবে বাদীনি জানান। এবং আটক কৃত রেশমি আকতার( তুফান) এর নিকটে থাকা নগদ পনেরো হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

আটকের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বন্দর জোনের উপপুলিশ কমিশনার সাকিলা সোলতানা নিশ্চিত করে জানায়, গত ১২ এপ্রিল  রাত অনুমান ৮ ঘটিকার সময় মোছাঃ বিলকিছ আক্তার(২২),তার  জন্ম নিবন্ধন কার্ড ন-১৯৯৭১৯১৭২৮৭০২২০৫১, পিতা-আলী আক্কাস, মাতা-আলেয়া বেগম, সাং-৭৪ আতাকড়া, পোঃ রায় গোবিন্দপুর, উত্তরদা, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লা বর্তমানে-ব্যাংক কলোনী, থানা-ইপিজেড  কে কাহারা তার এটিএম এর কার্ড ব্যবহার করে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা তুলে নেয়ার বিষয়টি টহল পুলিশের কাছে বাদীনির মৌখিক  অভিযোগ করিলে টহল পুলিশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিমকে অবহিত করে রাখেন এবং বিষয়টি মাথায় রেখে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডিসি মহোদয়ের দিকনির্দেশনা মতে   ইপিজেড এলাকায় সকল এটিএম বুথের আশপাশে পুলিশের নজরদারি বাড়িয়ে দিয়। তিনি আরও বলেন এই প্রতারক চক্রটি  গার্মেন্টস কর্মীদের সরলতা সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল।

এরই সূত্র ধরে গত ১৪ ই এপ্রিল চৌধুরী মার্কেট এটিএম বুথের পাশে ঘুরাঘুরি করার সময় সন্দেহভাজন হলে  ইপিজেট থানা পুলিশ রেশমি বেগম  প্রকাশ তুফান নামে এক মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং বাদিনি বিলকিস বেগম ঐ মহিলাকে সনাক্ত করে।

ইপিজেট থানা সূত্রে আরও  জানা যায়,গার্মেন্টস শ্রমিক  বাদীনি বিলকিস বেগম গত ১২ এপ্রিল  রাত অনুমান ৮ ঘটিকার সময় চৌধুরী মার্কেট ডাচ বাংলা ব্যাংক এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে আসিলে পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা প্রতারক আটক রেশমি আক্তার কৌশলে  বিলকিস বেগমের এটিএম এর পাসওয়ার্ড জেনে নেয় এবং অকেজো  একটি এটিএম কার্ড পলকে পাল্টিয়ে দিয়ে  প্রতারক রেশমি বেগম সটকে পড়ে। এবং  উক্ত কার্ড দিয়ে গত ১২ এপ্রিল  রাত অনুমান ৮.১০ ঘটিকায় সময় ১ম বারে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় বারে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় বারে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকাসহ সর্বমোট ২৪,৫০০/-(চব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা উত্তোলন হয়েছে বলে মোবাইলে ডাচ্ বাংলা থেকে একটি মেসেজ আছে। বাদীনি মোবাইলে ম্যাসেজ পেয়ে কান্নাকাটি করে এবং ঘটনার বিষয়টি টহল পুলিশকে অবহিত করে। টহল পুলিশ উক্ত ঘটনার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথা বলিলেও বাদীনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ায় ঐদিন থানায় অভিযোগ করে বাসায় চলে যায়। এবং  পরের দিন ১৩ ই এপ্রিল বাদীনি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে তাহার কার্ড হতে টাকা উত্তোলন ও কার্ড লক হয়ে যাওয়ার বিষয়ে অবহিত করিলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক হতে বাদীনিকে জানায় কে বা কাহারা তাহার কার্ড ব্যবহার করে ইপিজেড থানাধীন ২নং মাইলের মাথা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ১ম বারে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় বারে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় বারে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকাসহ সর্বমোট ২৪,৫০০/-(চব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা উত্তোলন করা হয়েছে জানিয়ে দেয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায,  গত ১২ ই এপ্রিল রাত অনুমান ৮  ঘটিকার সময় জনৈকা মোছাঃ বিলকিছ আক্তার(২২), জন্ম নিবন্ধন কার্ড ন-১৯৯৭১৯১৭২৮৭০২২০৫১, পিতা-আলী আক্কাস, মাতা-আলেয়া বেগম, সাং-৭৪ আতাকড়া, পোঃ রায় গোবিন্দপুর, উত্তরদা, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লা, বর্তমানে-ব্যাংক কলোনী, থানা-ইপিজেড, জেলা-চট্টগ্রাম অত্র থানাধীন চৗধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে যাই। ঐসময় বুথের ভিতরে পূর্ব হতে উৎ পেতে থাকা জনৈকা মহিলা আসামী রেশমী বেগম প্রকাশ তুফান(৩৪), স্বামী-মোঃ ফারুক প্রকাশ রুবেল, পিতা-মৃত আবুল কাশেম, মাতা-আয়েশা বেগম, সাং- বড় বাজার(মোল্লাবাড়ী), থানা-বোরহান উদ্দিন, জেলা-ভোলা, বর্তমানে-ঈদগাহ বড় পুকুর পাড়, জমিদার হাসিনার ৫ম তলা বিল্ডিংয়ের নিচ তলার ১নং রুম, থানা-পাহাড়তলী, জেলা-চট্টগ্রাম(ভাসমান) দাঁড়ানো ছিল। উক্ত মহিলা বাদীকে জিজ্ঞাসা করে তুমি কি টাকা উত্তোলন করতে এসেছ? উত্তরে সে জানায় হ্যাঁ, তখন জনৈক মহিলা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের কার্ড ও পাসওয়ার্ড নাম্বার তাকে বলে দিলে সে টাকা উত্তোলন করে দিতে পারবে। তখন বাদীনি সরল বিশ্বাসে জনৈকা মহিলাকে তাহার কার্ড ও পাসওয়ার্ড নাম্বার দেয়। জনৈক মহিলা বাদীনির নিকট থেকে কার্ড নিয়ে নিজে বুথের ভিতর কার্ডটি প্রবেশ করায়। তখন জনৈকা মহিলা তাহার কার্ডটি বুথের ভিতরে প্রবেশ করিয়া কোন টাকা উত্তোলন না করে কার্ডটি বুথ থেকে বের করে তাহাকে জানায় ইন্টারনেটের সমস্যার কারণে টাকা বের হচ্ছে না। জনৈকা মহিলা বাদীনিকে পুনরায় চেষ্টা করতে বলে একটি কার্ড হাতে দিয়ে বুথ থেকে চলে যায়। জনৈক মহিলা চলে যাওয়ার পর বাদীনি টাকা উত্তোলন করার জন্য পুনরায় বুথে কার্ডটি প্রবেশ করিয়ে তাহার ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড দিলে ভুল পাসওয়ার্ড বলে কার্ডটি লক হয়ে যায়। বাদীনি টাকা উত্তোলন করতে না পেরে বুথ থেকে বের হলে ঐদিন অনুমান ১০ মিনিট পর তাহার ব্যবহৃত মোবাইলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলনের তিনটি ম্যাসেজ আসে। উক্ত ম্যাসেজের মধ্যে ১ম ম্যাসেজে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় ম্যাসেজে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় ম্যাসেজে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ইহাতে বাদীনির ধারণা হয় যে, সে চৌধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে টাকা উত্তোলন করার সময় তাহার পাশে থাকা জনৈকা মহিলা বাদীনির কার্ডের পাসওয়ার্ড আয়ত্ত করে এবং বাদীনি তাকে সরল বিশ্বাসে তাহার নামে কার্ডটি দিলে সে বাদীনিকে তাহার কার্ডের পরিবর্তে অন্য আরেকজনের কার্ড কৌশলে হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাদীনির আসল  কার্ড দিয়ে আটক রেশমি আকতার টাকা উত্তোলন করে নেয়।

ঠিক একই প্রতারণার ফাঁদ পাতানোর জন্য গত ১৪ই এপ্রিল বিবাদী রেশমি আকতার (তুফান)  পূর্বের ন্যায় অত্র থানাধীন চৗধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা এটিএম বুথের পাশে সন্দেহজনকভাবে ঘরাফেরা করাকালে টহল পুলিশ তাকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় টহল পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং  বিবাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত ছিল মর্মে সত্যতা স্বীকার করে বলে  সে গার্মেন্টস কর্মীদের টার্গেট করে অত্র থানাধীন বিভিন্ন এটিএম বুথ হতে তাহাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করিয়া আসিতেছে বলিয়া জানায়। বিবাদী ও তাহার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ২ /৩ জন বিবাদী পরস্পর যোগসাজসে বাদীনির সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বাদীনির সাথে প্রতারণামূলকভাবে তাহার কার্ডের পাসওয়ার্ড মুখস্হ করে এবং এ কার্ড দিয়ে অন্য একটি  এটিএম বুথ থেকে টাকা উঠিয়ে নেয় শিকার করে। এই সংক্রান্তে ইপিজেড থানার ( নং-১১) তাং-১৫/০৪/২০২৩ইং, ধারা-৪০৬/৪২০/৩৪ পেনাল কোডে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়।