ইউরোপীয় আমেরিকার কোনো দেশে যদি নারকীয় হত্যাকান্ডের আদর্শ রেখে দল তৈরি হয়- তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়

ইউরোপীয় বা আমেরিকার কোনো দেশে যদি জার্মানির নাৎসি বাহিনীর নারকীয় হত্যাকান্ড জায়েজ করার আদর্শ রেখে কোনো রাজনৈতিক দল তৈরি হয়,তাকে তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তিনি বলেন,  ওখানকার উগ্র ডানপন্থিরাও ভেবে চিন্তে কথা বলে এই বিষয়ে। ইউরোপের ইহুদি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে গনহত্যায় জড়িতদের পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল তারা দাড়াতে দেয় না। কারন, এই দলগুলো নতুন প্রজন্মের মধ্যে আবারো সেই উগ্রবাদী আদর্শকে জনপ্রিয় করে তাদের পশ্চিমা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করতে পারে। কিন্তু এর ঠিক উল্টোটা করার জন্যে আমাদেরকে মাঝেমধ্যে নসিহত করা হয়।

আমাদের দেশে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রত্যাখ্যান করা রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিএনপি তৈরি করলো, পরে আরও সদলবলে যোগ দিলো, জামায়াত-ই -ইসলামি প্রতিষ্ঠা করলো, জাতীয় পার্টি সহ নানান দলে ঢুকলো, ক্ষমতা দখলে রাখলো দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময়। এই সময়ে এরা বারংবার প্রমাণ করেছে এরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত গনহত্যার বিচার চায় না।

এরা ৭ই মার্চ, ২৫শে মার্চ, ১৪ই ডিসেম্বর, কোনও স্মৃতিচারণ করেনা। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের দিনে কোনো রকমে দায়িত্ব পালন করে। কখনও এই দিনগুলোকে ঘিরে তাদের আদর্শিক অবস্থান, তাদের পুর্বসূরী নেতা ও পিতাদের ভুমিকা নিয়ে এরা আলোচনা করেনা, বরঞ্চ ইতিহাস বিকৃতির রাজনৈতিক প্রচারের মাত্রা এই দিনগুলোতে আরও বাড়িয়ে দেয়।

একাত্তরের রাজাকার গোষ্ঠীর পরবর্তী প্রজন্মের একটি বিশাল অংশ এই অপশক্তির মধ্যে আশ্রিত। এদেরকে এই দেশে আরও বেশি রাজনৈতিক অধিকার দেয়ার জন্যে লবিস্টদের পয়সায় নানান দেশের তৎবির আমাদের দেশে আসে। এদের খুন করার অধিকার, দূর্নীতি করার অধিকার সুরক্ষায় আমাদেরকে নসিহত করা হয়। যারা দেয়, তারা তাদের দেশে খুন-গনহত্যা সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার কিন্তু সমূলে উৎখাত করেছে!

তাই আমাদের কাজ আমাদেরই করতে হবে। এদের ছবক নসিহতে আমাদের কিছুই যায় আসেনা। এনাদের কথা, এনাদের মক্কেল রাজনৈতিক অপশক্তির কথামতো চললে, বাংলাদেশ হতো রুয়ান্ডা, বুরুন্ডী, কঙ্গো, আফগানিস্তান। এইসব নসিহত না শোনায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তার দক্ষ নেতৃত্বে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার, আগামীতেও এই দেশে নেতৃত্ব দেবে।

মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির আদর্শিক অবস্থানের পরিবর্তন, রাজনৈতিক কর্মকৌশলের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এদের সাথে আলোচনা করে কোনো লাভ হবেনা। এদের নেতা লন্ডনে বসে আরামেই আছে। বাংলাদেশটাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে আবারও তার লুটপাট চালানোর জন্যে সার্বক্ষণিক পরিকল্পনা করছে সে। এই গোষ্ঠীকে তাই রুখতেই হব, এর কোনো বিকল্প নেই। এই জন্যে চাই প্রগতিশীল সকল শক্তির ঐক্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল দল-মত, বুদ্ধিজীবী, সামাজিক শক্তিকে এক কাতারে এনে এই অপরাজনৈতিক শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধের ডাক দেয়ার সময় আবারও এসেছে।

তাই এ বছরের স্বাধীনতা দিবসের শপথ হোক এই বাংলাদেশ বিরোধী অপরাজনৈতিক শক্তিকে রুখে দেয়া! এদের পরাজয়েই বাংলাদেশের বিজয়।