গৃহবধূর কাজের অর্থনৈতিক মূল্য আমরা না-ই বা দিতে পারলাম সিএমপি কমিশনার।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সিএমপি কমিশনার বলেছেন,  তথাকথিত ভাবনায় দারুণ কিছু করেনি সে পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফলাফল, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার বা অলিম্পিকে মেডেল, কিছুই না। তাকে আমরা চারপাশে দেখ নিজেদের মধ্যে দেখি, নিজের বিপরীতেও দেখি।

তাকে আমরা খুঁজে পাই রান্নাঘরে, দেশের অর্থমন্ত্রীর চেয়েও প্রচন্ড নৈপুণ্যে সামান্য আয়ের টাকায় সন্তানের পাতে এক টুকরো মাছের ব্যবস্থা করতে। দেখি নোটবন্দির কষ্ট-কালে তার সযত্নে সঞ্চিত সামান্য অর্থটুকু নিয়ে স্বামীর পাশে দাঁড়াতে। আবার সে-ই বাজারে গিয়ে সস্তার সবজি কেনে। টেলিভিশনের পর্দায় ন্যাশনাল প্যারেডে নারীদের নেতৃত্বে ছেলেদের প্যারেড দেখে, হলুদ মাখা হাত আঁচলে মুছে তার নিজের মেয়ের দিকে এক বুক আশা নিয়ে তাকায়- একদিন মেয়ে তার বড় হবে।

সে কাঁদতে পারে, চিৎকার করতে পারে, আবেদন করতে পারে, দাবি জানাতে পারে, হেরে যেতে পারে, আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়েও নিতে পারে- তার নিজের নিয়মে। এমনকি প্রয়োজনে লিখে ফেলতে পারে ‘স্ত্রীর পত্র’, আবার রুখে দাঁড়াতে পারে ‘জোয়ান অব আর্কের মতো’।

অথচ ‘নারী দিবস’ কী, সে জানেই না! আসলে প্রতিটি দিনই তার।

পরিসংখ্যান দরকার নেই। গৃহকোণে কন্যার চাপা কান্নার আওয়াজ বলে দেবে, সে অবহেলিত। আবার সেই মেয়েটিই থানায় গিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে আটকেও দেয়। লেখাপড়া করে দফতরে দফতরে কাজ নেয়। জীবনের ‘ভিক্ট্রি স্ট্যান্ড’-এ সে তার প্রতিটি মুহূর্তকে দাঁড় করায় স্মিতহাস্যে।

তাই আজ শুধু সেমিনার, আলোচনা আর প্রবন্ধ নয়। বরং বারংবার প্রত্যাশা করি, কারখানায় নাইট শিফটে নারী শ্রমিকের কাজ আরো নিরাপদ হবে। রাস্তায়, বাস স্টপে, রেল স্টেশনে তাদের জন্য পর্যাপ্ত এবং পরিষ্কার শৌচাগার বসবে। বাড়িতে ও কর্মস্থলে নিশ্চিত হবে সমমর্যাদা। সহকর্মী থেকে বস, সকলে তার উপদেষ্টা না হয়ে বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী হবে। চব্বিশ ঘণ্টা শ্রম দেওয়া গৃহবধূর কাজের অর্থনৈতিক মূল্য আমরা না-ই বা দিতে পারলাম, অন্তত তার সম্মানটুকু থাকবে অটুট।

এই বাধাগুলো প্রত্যেক দিন একটু একটু করে টপকানোই হলো ‘নারী দিবস’। সবাইকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস- ২০২৩ এর শুভেচ্ছা।