চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড এবং বাংলাদেশ কখনো শ্রীলংকা হবে না- নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।

 

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড  বন্দরে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজের বার্থিং অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
আজ  ১৬ জানুয়ারি সোমবার  চট্টগ্রাম বন্দরের ভান্ডার ভবন এলাকায় নবনির্মিত ‘ বন্দর কেন্দ্রীয় ভান্ডার’ উদ্বোধন ও বন্দরে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজের বার্থিং অনুষ্ঠানে যোগদেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি  চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড এটি স্লোগান নয় বাস্তবতা। চট্টগ্রাম বন্দর যখন থেমে যায় তখন বাংলাদেশ থেমে যায়। গত ১৪ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর একদিনের জন‍্য বন্ধ হয়নি এবং  বন্ধ হয়নি বলে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।

পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ‍্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল নির্মাণের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম ২০০৮ সালে ছিল ৬০তম স্থানে।

১৪ বছরে ৩৫ তম স্থানে উন্নয়নে অধিকাংশ কৃতিত্বের অধিকারী চট্টগ্রাম বন্দর। গত ১৪ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ এলাকায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জেটিতে সর্বপ্রথম ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজের বার্থিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যেদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,
বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো: আরিফ এবং কর্ণফুলী রিভার স্টাডি কনসালটেন্ট এইচ আর ওয়ালিংফোর্ড এর বাংলাদেশের পার্টনার ইন্টারপোর্টের পরিচালক ড. মঞ্জুরুল হকসহ আরও অনেকে।

প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন বক্তারা আরো বলেন, ২০০মিটার দৈর্ঘের বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়লে জাহাজে কন্টেইনারের পরিমাণ বাড়বে ও পণ‍্য পরিবহন খরচ কমবে। ভোক্তা পর্যায়ে পণ‍্যের দাম কমে সুফল পাবে সাধারণ মানুষ ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ৬,৬৫০টি জাহাজ ভিড়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বক্তব্যে  আরও বলেন  পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের ৯৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে  দ্রুততম সময়ের মধ‍্যে এটি চালু করা হবে। ২০২৪ সালে বে-টার্মিনাল চালু করার কথা থাকলেও করোনা মহামারি এবং বৈশ্বিক দুর্যোগ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বহুবিধ সমস‍্যায় আছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বসে নাই। আমাদের সক্ষমতা আছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বে-টার্মিনালের বৃহৎ অংশ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল যেটি চট্টগ্রাম বন্দর করবে সেটির ডিটেইল প্লান তৈরি হচ্ছে। ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুতে বে-টার্মিনালের বৃহৎ অংশ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল যেটি চট্টগ্রাম বন্দর করবে সেটি চালু করতে সক্ষম হব। মাতারবাড়ী বন্দর ২০২৬ সালের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে চালু করতে পারব বলেও তিনি  জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, অনেকে বলেছেন বাংলাদেশ শ্রীলংকার মতো হয়ে যাবে ” তা হয়নি। কেন হলোনা-এটা অনেকের মনে কষ্ট হচ্ছে। আগে বাংলাদেশ বাজেট তৈরির জন‍্য বিদেশীদের কাছে যেতে হতো। এখন দাতাগোষ্ঠী আমাদের পিছনে হাটছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এখন আর আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি নই; সেটি মিথ‍্যা প্রমাণিত। ২০৩০ সালে অর্থনৈতিক সূচকে ২৫-৩০ এর মধ‍্যে চলে যাব। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের মাটি ও মানুষকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করেছি।

বাংলাদেশ শুধু বাংলাদেশের জন‍্য নয়; আঞ্চলিক দেশগুলোর ছন‍্য তৈরি হচ্ছে। বৈদেশিক বিনিয়োগ অপেক্ষা করছে। সমগ্র পৃথিবীর বিনিয়োগকারিরা বাংলাদেশে আসবে। এজন‍্য দরকার স্থিতিশীলতা। গত ১৪ বছরে স্থিতিশীলতা আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়। সেটি সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছেন দেশের মানুষকে যে সম্মান দিয়েছেন সেখানে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার বিকল্প অন‍্য কিছু ভাবছেনা। আগামী নির্বাচনে আরো বেশি সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে। কোন বিদেশী চাপে পিছিয়ে যাবেনা। দেশের মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের ভান্ডার ভবন এলাকায় নবনির্মিত  বন্দর কেন্দ্রীয় ভান্ডার’  ৭১ কাঠা জমির ওপর নবনির্মিত ভান্ডারের মোট  ৫১,০০০বর্গফুট প্রজেক্ট এরিয়া উদ্বোধন করেন।