(এলাকাবাসী জানায়, চট্টগ্রাম সিইপিজেড এর সুনামধন্য প্যাসিফিক গ্রুপের নামের সাথে মিল রেখে বেকারি নাম দেন - প্যাসিফিক হোম মিট ফুড প্রোডাক্টস!)

নগরীর হালিশহরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারীতে খাদ্যপণ্য উৎপাদন – অনুমোদিত ছাড়া এ উৎপাদনে- বছরে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের  অনুমতি না নিয়ে বেকারিতে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করার অভিযোগ উঠেছে নগরীরন একটি  বেকারের বিরুদ্ধে।

চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানাধীন মধ্যম হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকা  চন্দার পাড়ায় প্যাসিফিক হোম মিট ফুড প্রোডাক্টস নামের বেকারি বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে।

সরেজমিনে – দেখা যায় কারখানার শ্রমিকরা হেনগ্লাভস   ছাড়া, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনের বীভৎস চিত্র। অনুমোদন বিহীন ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে  এ কারখানায় তৈরী হচ্ছে,  বিস্কুট, ড্রাই কেক, কেক, বাটার বন, ক্রিমবনসহ  শিশুদের নানান রুচিকর খাদ্যপণ্য।

নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বছরকে বছর প্যাসিফিক নাম ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার  হারাচ্ছে  লাখ লাখ টাকার রাজস্ব।

এলাকাবাসী জানায়, পূর্বে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজশে  কারখানার চালিয়ে গেলেও বর্তমানে একটি ইসলামিক সংগঠনের নেতা পরিচয় দেন প্যাসিফিক বেকারির মালিক।

কারখানায় দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম-এর কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়, সরকারি কোনো দপ্তরের অনুমতি কিংবা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে কিনা—তিনি কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। অথচ কারখানায় উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের প্যাকেটে সুস্পষ্টভাবে ছাপানো রয়েছে বিএসটিআই অনুমোদিত লোগো। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি স্বীকার করেন, বর্তমানে অনুমোদন নেই তবে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বেকারির কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, “এখানে বহু বছর ধরে কারখানা চলছে। কখনো এভাবে কেউ এসে জানতে চায়নি।” কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং অস্বাস্থ্যকরভাবে উৎপাদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

এ বিষয়ে-  মালিক পক্ষর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের  চেষ্টা করিলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।  পরবর্তীতে দেলোয়ার নামে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে নিজেকে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি দাবি করে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

তিনি প্রতিবেদককে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, “আপনারা কে আমাদের কারখানার কাগজপত্র চাইবেন? এই অনুমতি কে দিয়েছে?”
ফলে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বছরের পর বছর ধরে এই কারখানায় কোনো ধরনের সরকারি তদারকি ছাড়াই চলছে খাদ্য উৎপাদন। ফলে ভোক্তারা অজান্তেই কিনছেন নোংরা পরিবেশে তৈরি নিম্নমানের পণ্য, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের খাদ্য দীর্ঘদিন ভোক্তারা গ্রহণ করলে হজমের সমস্যা, পেটের অসুখ, খাদ্যবাহিত রোগ এমনকি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগও হতে পারে। তাই দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা জরুরি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে এলাকায় এই কারখানা চালু থাকলেও কখনোই কোনো সঠিক তদারকি বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দেখা যায়নি। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমরা চাই দ্রুত এধরনের ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন বন্ধ করা হোক।”
এ ঘটনায় খাদ্য অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই-এর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে।

এই বিষয়ে  – সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁহারা জানান অতি শীঘ্রই উক্ত  বেকারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জানান।