ঢাকায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসবভন যমুনা অভিমুখে- পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ – শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ।

রাজধানী ঢাকায় তিনদফা দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার  যমুনা অভিমুখে যাত্রা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

বুধবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে শাহবাগে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সামনে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এর আগে তিন দফা দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

সেখানে দুপুর ১টার মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে ‌মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের বেরিকেড ভেঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হলে মাঝপথে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা পিছনে ফিরতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে আবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ চলমান থাকে।

শিক্ষার্থীরা ওই রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। দুপুর একটা ৪০ মিনিটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মৎস্য ভবনের সামনে পৌঁছলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা লাঠি, ইট ও জুতা নিক্ষেপ করতে শুরু করলে ১টা ৫০ মিনিটে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে।

পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হলে জল কামান ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি কাদানি গ্যাস নিক্ষেপ করে। পরে শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

আহসানুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের এই হামলায় ৫ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। একাধিকবার সাউন্ডগ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপে শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে শাহবাগের বারডেম হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয়।

দুপুর ২টা ১০ মিনিটে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাউন্ড গ্রেনেড, জল কামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ১টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো, কোনো আপডেট নাই। পোলাপান যমুনা অভিমুখে গেলো, পুলিশের কোনো ব্যারিকেড নাই। পুলিশ দূর থেকে এসে থামানোর চেষ্টা না করে দৌড়াচ্ছে। একজনের গলা টিপে ধরল। আমরা স্টুডেন্টরা কয়েকজন মিলে থামাইলাম সবাইকে। শান্ত করতেছি সবাইকে। এর মধ্যে পুলিশ হঠাৎ পোলাপান শান্ত হওয়ার পরে পুলিশ এসে হামলা করল। সমানে লাঠিপেটা আর সাউন্ড গ্রেনেড। বার বার বললাম, আমরা পোলাপানকে পেছায়ে নিয়ে যাচ্ছি, উল্টো আমাদেরও মারল। রক্তাক্ত করল। এখনো হামলা করে যাচ্ছে আমাদের ওপর।

শিক্ষার্থীদের দাবি, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেওয়া, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা এবং দশম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়া।